আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মৌলবাদী ইসলামী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতা ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে গোপন বৈঠকে বসছেন সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহা। যুক্তরাজ্যে স্বেচ্ছা নির্বাসনে থাকা জামায়াতের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের এই নেতা সাবেক বিচারপতি এস কে সিনহার সঙ্গে বৈঠকের উদ্দেশে যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন।
আগামী ৯ থেকে ১২ অক্টোবর; চারদিনের যুক্তরাষ্ট্র সফরে জামায়াতের সহকারী এই সেক্রেটারি এস কে সিনহার সঙ্গে গোপন বৈঠকের পাশাপাশি হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তা, সিনেটের আইনপ্রণেতা, হাউস কমিটির কর্মকর্তা ও মার্কিন কয়েকটি থিঙ্ক ট্যাংকের বিশ্লেষকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে উইকলি ব্লিৎজ।
তবে যুক্তরাষ্ট্রে জামায়াত নেতার গুরুত্বপূর্ণ এই সফর এখনও গণমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেনি। বিশ্বস্ত একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে উইকলি ব্লিৎজ বলছে, ‘যুক্তরাজ্যে স্বেচ্ছা নির্বাসনে থাকা ব্যারিস্টার রাজ্জাক যুক্তরাষ্ট্র সফরে বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। তবে বৈঠকের স্থান এখনও চূড়ান্ত হয়নি।’
আরও পড়ুন : সিনহার অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক লেনদেন, দুদকে দুই ব্যবসায়ী
কিন্তু বেশ কয়েকটি সূত্র বলছে, ‘বাংলাদেশের সাবেক এই বিচারপতির সঙ্গে জামায়াত নেতার গোপন ওই বৈঠক ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত হতে পারে। ওয়াশিংটনের ক্যাপিটল হিল স্যুটে অবস্থান করতে পারেন তারা।’
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল। ১৯৪১ সালে তৎকালীন ব্রিটিশশাসিত ভারতের লাহোরে কট্টরপন্থী মৌলবাদী আবুল আল মওদুদীর নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত এই রাজনৈতিক দলের শাখা রয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পূর্ব পাকিস্তানের লাখ লাখ মানুষকে হত্যায় পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীকে সহায়তা করে জামায়াত। একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ইতোমধ্যে দলটির বেশ কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় নেতার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে।
উল্লেখ্য, সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় এবং কিছু পর্যবেক্ষণের কারণে ক্ষমতাসীনদের তীব্র সমালোচনার মুখে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা ৩৯ দিনের ছুটিতে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমান ২০১৭ সালের ৩ অক্টোবর।
প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা ছুটি নিয়ে বিদেশ যাওয়ার পর সুপ্রিম কোর্ট জানায়, তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অর্থপাচার, আর্থিক অনিয়ম ও নৈতিক স্খলনসহ সুনির্দিষ্ট ১১টি অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের কারণে আপিল বিভাগের অন্য বিচারকরা প্রধান বিচারপতির সঙ্গে বসে মামলা নিষ্পত্তিতে রাজি নন।
২০১৫ সালের ১৭ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া এস কে সিনহার মেয়াদ শেষ হতো ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি।
সুপ্রিম কোর্টের অবকাশ শুরুর আগে গত বছরের ২৪ অাগস্ট তিনি শেষ অফিস করেন এবং অবকাশ শেষে ৩ অক্টোবর আদালত খোলার দিন থেকে ছুটিতে যান। পরে বিদেশে বসেই পদত্যাগ করেন তিনি।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এখন পর্যন্ত ২১ জন প্রধান বিচারপতি দায়িত্ব পালন করলেও পদত্যাগের ঘটনা ছিল এটাই প্রথম। রাষ্ট্রের তিন স্তম্ভের একটির প্রধান ব্যক্তির এমন পদত্যাগ ৪৭ বছরের ইতিহাসে প্রথম।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।